.

র‌্যাব-সদৃশ পোশাক ব্যবহারের অপরাধে যমুনা গ্রুপের ১২ নিরাপত্তাকর্মী গ্রেপ্তার

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) তাদের ইউনিফর্মের অনুরূপ পোশাক ব্যবহার করার কারণে যমুনা গ্রুপের ১২ নিরাপত্তারক্ষীকে গ্রেপ্তার করেছে। র‌্যাব সূত্র জানায়, শনিবার গভীর রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় তাদের ভাটারা থানায় হস্তান্তর করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। র‌্যাব-সদৃশ পোশাক তৈরিতে মদদ দেওয়ার অভিযোগে যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাবুলকে খোঁজা হচ্ছে।
র‌্যাব-১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল কিসমত হায়াৎ বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পোশাকের আদলে বেসরকারি কম্পানি কিংবা ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বাহিনীর পোশাক তৈরি করা অপরাধ। এ কাজটিই করেছে যমুনা গ্রুপের নিরাপত্তাকর্মীরা। তারা ২০০৬ সালের সংশ্লিষ্ট একটি আইনের ১১(২) ধারা লঙ্ঘন করে আসছিল। সম্প্রতি বিষয়টি জানতে পেরে যমুনা গ্রুপের প্রশাসনকে একদফা অবহিত করা হয়। তাদের নিরাপত্তাকর্মীদের র‌্যাবের আদলে পোশাক ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়। কিন্তু যমুনার লোকজন তাতে কান দেয়নি। এ পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের খোঁজা হচ্ছে।
কিসমত হায়াৎ আরো বলেন, র‌্যাবের আদলে পোশাক পরে সমাজে নানা ধরনের অপরাধ সংঘটিত করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগ আগেও পাওয়া গেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে অনেক অপরাধীকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। সরকারি বাহিনীর সুনাম ক্ষুণ্ণ হয় এমন বেআইনি কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে র‌্যাব দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
জানা গেছে, যমুনা গ্রুপের নিরাপত্তারক্ষীরা দীর্ঘদিন ধরে র‌্যাবের মতো আপাদমস্তক কালো পোশাক ব্যবহার করছে। যমুনা ফিউচার পার্ক ও আশপাশের এলাকায় টহল দেওয়ার সময় মানুষকে ভয়ভীতিও দেখায় তারা। কখনো পোশাকের বদৌলতে র‌্যাব পরিচয় দিয়ে অপকর্ম করছে। এতে জনমনে তাদের নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। তাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগও পাওয়া গেছে। যমুনার (ইকুইপমেন্ট) নিরাপত্তারক্ষীদের কারণে আশপাশের লোকজনকে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
সূত্র জানায়, সম্প্রতি যমুনা ফিউচার পার্কের নির্মাণাধীন ভবনের সাটার ভেঙে মোটরসাইকেল আরোহী ব্যবসায়ী শাহীন নিহত হওয়ার ঘটনার পর কালো পোশাক পরা এসব নিরাপত্তারক্ষী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রাস্তায় নেমে ব্যারিকেড দেয়। তারা শাহীনের লাশ উদ্ধারে বাধা দেয়; এমনকি থানা-পুলিশের কাজেও বাধার সৃষ্টি করে বলে অভিযোগ রয়েছে। সরকারি বাহিনীর পোশাকের স্টাইলে পোশাক বানিয়ে ব্যবহার করাকে বেআইনি কাজ বলে মন্তব্য করেছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা মহানগর পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আদলে পোশাক ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকার জন্য কয়েক দফা নির্দেশনা জারির পরও যমুনা গ্রুপের নিরাপত্তারক্ষীরা ওই পোশাক ব্যবহার করছিল। গত এপ্রিল ও জুলাইয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে ‘সরকারি বাহিনীর পোশাকের আদলে পোশাক’ ব্যবহার না করতে সতর্ক করে দেওয়া হয়। নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ামাত্র ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
ভাটারা থানা-পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারকৃত যমুনা গ্রুপের নিরাপত্তারক্ষীদের গতকাল সন্ধ্যায় থানায় হস্তান্তর করে র‌্যাব। তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে।

0 Response to "র‌্যাব-সদৃশ পোশাক ব্যবহারের অপরাধে যমুনা গ্রুপের ১২ নিরাপত্তাকর্মী গ্রেপ্তার"

Post a Comment