অপরাধের শেষ কোথায়?
খুলনা বিভাগীয় প্রতিনিধি সুকেশ সরকার:- গত ৮ই জুলাই সিলেটের শিশু সামিউল আলম রাজন(১৪) হত্যার একমাস না হতে আবারও খুলনা মহানগরীতে টুটপাড়ায় এক শিশুর মলদ্বারে সিলিন্ডারের মাধ্যমে হাওয়া ঢুকিয়ে অমানষিক নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সোমবার রাত ১০ টার দিকে নগরীর টুটপাড়া এলাকায় রোজ ব্যাটারী নামক একটি মটর সাইকেল গ্যারেজে শিশু রাকিবের(১২) উপর নির্মম নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। রাকিব টুটপাড়া সেন্ট্রাল রোডের মৃঃ মোঃ আলমের ছেলে। অমানুষক নির্যাতনের সময় শিশু রাকিবের চিৎকারে নির্যাতনকারীদের হৃদয়ে সামান্যতম দয়া-মায়ার অনুভূতি হয়নি। এমনকি আশেপাশের কেউ এগিয়ে আসেনি। পরে ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয় জনতা গণপিটুনি দিয়ে গ্যারেজ মালিক মিন্টু মিয়া (৪০), কর্মচারী শরীফ (৩০) ও তার মা বিউটি বেগমকে(৫৫) পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তাদের দু’জনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রিজন সেলে ভর্তি করা হয়। ঘটনার সময় বিউটি বেগম উপস্থিত থাকলেও তিনি শিশুটিকে বাঁচাতে যাননি বলে জানান খুলনা সদর থানা ওসি। ওসি সুকুমার বিশ্বাস জানান টুটপাড়া কবর খানার অদূরে রোজ ব্যাটারী নামক একটি গ্যারেজ থেকে সম্প্রতি কাজ ছেড়ে দেয় শিশু রাকিব। পরে সে পিটিআই মোড়স্থ নুর আলম গ্যারেজে কাজ নেয়। এই ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়ে পূর্বের মালিক মিন্টু মিয়া সোমবার রাতে মিন্টুর গ্যারেজের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় শিশু রাকিবকে ডাক দেয় পূর্বের মালিক মিন্টু। এক পর্যায়ে শিশু রাকিবকে বিবস্ত্র করে তার মলদ্বারে টাওয়ারে হাওয়া দেওয়ার পাইপ প্রবেশ করিয়ে দেয়। এরপর উল্লাস করতে করতে রাকিবের মলদ্বার দিয়ে হাওয়া প্রবেশ করায়। এক পর্যায়ে শিশু রাকিবের পেটসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে ফেঁপে ওঠে। এ সময় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে শিশু রাকিব। পাষন্ড গ্যারেজ মালিক মিন্টু ও তার কমৃচারী শরীফ শিশু রাকিবের শরীরে বিভিন্ন অংশে চাপ প্রয়ো করে বাতাষ বের করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। উপরন্ত না দেখে শিশু রাকিবকে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখানেও অবস্থার অবনতি হলে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে ঢাকায় নেওয়ার উদ্দেশ্যে এ্যাম্বুলেন্সে উঠালে শিশু রাকিব মারা যায়। চিকিৎসকদের বরাদ দিয়ে ওসি সুকুমার জানান শিশু রাকিবের শরীরে অস্বাভাবিক পরিমান হাওয়া প্রবেশ করানোর কারণে তার পেটের নাড়িভূড়ি ছিড়ে যায়। ফুসফুস ফেটে যাওয়াসহ শরীরের বিভিন্ন অর্গাল অকেজো হয়ে যাওয়ার ফলে সে মারা যায়। নিহত শিশু রাকিবের লাশ ময়না তদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার তার ময়না তদন্ত করা হবে। এদিকে নির্যাতনকারী গ্যারেজ মালিক মিন্টু মিয়া ও কর্মচারী শরীফকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। তাদের দু’জনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রিজন সেলে রেখে চিকিৎসা করা হচ্ছে। এহেন হৃদয় বিদারক ঘটনায় আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে ওঠে এবং খুলনায় মহানগরীতে কান্নার রোল পড়িয়া গিয়াছে। এই ঘটনাকারী মিন্টু মিয়া এবং তার সহযোগিরা দৃষ্টান্ত মূলক সর্বোচ্চ শাস্তি পায় তাহার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস, ক্রাইম রিপোর্টাস ফাউন্ডেশন,
খুলনা বিভাগীয় প্রতিনিধি সুকেশ সরকার।