ইতিমধ্যে গোলাম মোস্তফাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সারাদেশে যখন সিলেটের শিশু রাজন হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হচ্ছে ঠিক তখনই সাতক্ষীরার শ্যামনগরে গাছের সঙ্গে বেঁধে দুই শিশুকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতনের শিকার শিশুরা হলো- ইয়াছিন তরফদার (৮) ও নাসিম তরফদার (৯)। তারা শ্যামনগেরর কাশিমাড়ী ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের ইসমাইল তরফদার ও হামিদ তরফদারের ছেলে। তারা দু’জনই তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র।
জানা গেছে, বৃষ্টির সময় গ্রামের এক প্রভাবশালী ব্যক্তির বাড়ির সামনে রাস্তায় খেলা করে কাদা করার অপরাধে তাদের ধরে নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়। গত ১৬ জুলাই এ ঘটনার পর শিশু নির্যাতনের অভিযোগে জমির মালিক মোস্তফাকে পুলিশ ছয় দিনপর বুধবার বিকেলে গ্রেপ্তার করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিশু ইয়াছিন ও নাছিম প্রতিবেশি মোস্তফার জমির উপর দিয়ে তৈরি করা পায়ে হাঁটা রাস্তার ওপর খেলা করছিল। এসময় বৃষ্টি শুরু হওয়ায় মোস্তফা তাদের ওই রাস্তা থেকে চলে যেতে বলে। পরবর্তীতে মোস্তফা সেখান থেকে চলে গেলেও অবুঝ শিশু দু’টি একই স্থানে খেলা করতে থাকে। এসময় রাস্তায় কাদার সৃষ্টি হওয়ায় মোস্তফা পরে বাড়ি থেকে এসে ওই দুই শিশুকে আটক করে। এক পর্যায়ে শিশু দু’টিকে তিনি গাছের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে মারপিট করে। এসময় শিশুদের অভিভাবকরা এগিয়ে এলে তাদেরও মারধর করতে উদ্যত হয় মোস্তফা।
বিষয়টি পুলিশের কানে গেলে ঘটনার ৬ দিন পর শ্যামনগর থানা পুলিশ শিশু নির্যাতনকারী মোস্তফাকে বুধবার গ্রেপ্তার করে। মোস্তফা স্থানীয় প্রভাবশালী নাজমুস সাদাত বিল্লালের নেতৃত্বে উল্টো ওই শিশুদের পরিবারকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
কাশিমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনিসুজ্জামান আনিস জানান, জয়নগর গ্রামের গোলাম মোস্তফার সঙ্গে আব্দুল হামিদ তরফদারের ওই রাস্তা নিয়ে দীর্ঘদিন বিরোধ চলছিল। ঘটনার দিন আব্দুল হামিদ তরফদার ও ঈসমাইল তরফদারের দুই শিশু ওই রাস্তায় খেলা করার সময় গোলাম মোস্তফা তাদের ধরে নিয়ে বাড়ির একটি জামগাছে বেঁধে রাখে।
তবে গ্রেপ্তারকৃত গোলাম মোস্তফা জানান, শিশু দু’টিকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখেছিলাম এটা সঠিক কিন্তু তাদের শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার ঘটনাটি সঠিক নয়। তিনি আরো জানান, তাকে ফাঁসাতে তার প্রতিপক্ষরা পরে দড়ি ও শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে তার উপর দোষ চাপাচ্ছেন।
কালিগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মীর মনির হোসেন জানান, জমিজমা সংক্রান্ত ব্যাপারে আগে থেকেই তাদের মধ্যে বিরোধ চলছিল।
তিনি আরো জানান, বেঁধে রাখার ঘটনাটি সঠিক হলে শিশু ইয়াছিন ও নাছিমের নির্যাতনকারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি আরো জানান, বেঁধে রাখার ঘটনাটি সঠিক হলে শিশু ইয়াছিন ও নাছিমের নির্যাতনকারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শ্যামনগর থানার ওসি ইনামুল হক জানান, এ ব্যাপারে নির্যাতনের শিকার শিশু নাসিরের পিতা হামিদ তরফদার বাদী হয়ে গোলাম মোস্তফাসহ তার ছেলেকে আসামি করে শ্যামনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। বুধবার রাতেই মামলাটি থানায় রের্কড করা হয়েছে। ইতিমধ্যে গোলাম মোস্তফাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।