.

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগিং -এর নামে নবীন ছাত্র -ছাত্রীদের উপর চলছে পাষবিক নির্যাতন

দেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় বলে ক্ষ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। তাছাড়া এটি দেশের অন্যতম নয়নাভিরাম বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন কারণে পত্রিকায় শিরোনাম হয়। কালের বিবর্তনে আজ সব সুনাম ক্ষয়ে পড়েছে। দি ক্রাইম ওয়াচ রিপোর্ট তারই ধারাবাহিক রিপোর্ট প্রকাশ করছে। ক্লাসের প্রথম দিন নতুনদের উপর র‍্যাগিং নতুন কিছু নয়। প্রথমে র‍্যাগিং দিয়ে শুরু হলেও পরে ভার্সিটির বড় ভাই/নেতাদের মনোরঞ্জনে শরীরটাও বিকিয়ে দিতে হয় টিকে থাকতে হলে। 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরিক্ষা দিতে একজন শিার্থী একটি আবাসিক হলে অবস্থান করছিল। গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে ওই ছাত্রের কে ঢোকে হলের ছয়জন শিার্থী। জিজ্ঞেস করে, ‘কিরে মুরগি, ভর্তি পরীক্ষা দিবি। এরপর তাঁর শার্টের ভেতরে বালিশ দিয়ে গর্ভবতী মহিলার মতো বানিয়ে বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতে বাধ্য করা হয়। এক পায়ে দাঁড় করিয়ে রাখা হয় প্রায় এক ঘণ্টা। চোখে জল না আসা পর্যন্ত চলে এ ধরনের মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন।

র‌্যাগিংয়ের নামে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীসহ অতি উৎসাহী সাধারণ শিার্থীরা ভর্তি-ইচ্ছুক শিার্থীদের এভাবেই নির্যাতন চালায়। গত ৩ ফেব্রুয়ারি ভর্তি পরীা শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ভর্তি-ইচ্ছুকেরা থাকার জায়গা হিসেবে হলের পরিচিত বড় ভাইদের ক বেছে নেয়। পরীার প্রথম দিন থেকেই বিভিন্ন ছাত্রহলে ভর্তি-ইচ্ছুকেরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। তবে মীর মশাররফ হোসেন ও শহীদ সালাম-বরকত হলে এই প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। নির্যাতনের শিকার শিার্থীদের অনেকেই ভর্তির সুযোগ হলেও এখানে পড়বে না বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছে। গত বছর এ ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়ে পঞ্চগড়ের সিরাজুল ইসলাম, জাকির হোসেন, মজিবুর রহমানসহ অনেকে পরীা না দিয়েই ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে গিয়েছিল। 

গত শনিবার নির্যাতনের শিকার এক ছাত্র বলেন, তাঁকে গর্ভবতী মহিলার অভিনয় করতে হয়েছে। অভিনয় ভুল হলে করা হয়েছে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ। অ্যাজমার রোগী হওয়া সত্ত্বেও খালি গায়ে প্রায় এক ঘণ্টা এক পায়ে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। তিনি বলেন, ‘ভেবেছিলাম সকালে ঘুম থেকে উঠেই বাড়ি চলে যাব। কিন্তু আমার সঙ্গে ছোট বোন পরীা দিচ্ছে, তাই বাধ্য হয়েই থাকতে হচ্ছে। তবে চান্স পেলেও আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ব না।’ আরেক শিার্থী জানান, তাঁকে মোট পাঁচবার নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। কখনো গরু, কখনো কুকুরের মতো আচরণ করতে হয়েছে। 

ভর্তি-ইচ্ছুকদের নির্যাতনে অংশ নেওয়া একজন ছাত্র বলেন, ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা ছাত্রদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সময় একটু মজা করা হয় মাত্র। র্যাগিংয়ের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে দ্রুত সম্পর্কের উন্নতি করা যায় বলে তিনি মন্তব্য করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর মো. নাসির উদ্দিন বলেন, হলে র‌্যাগিং বন্ধ করতে প্রতিটি হলের প্রাধ্যকে প্রয়োজনীয় পদপে নেওয়ার জন্য বলা হবে। 

ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সুহেল পারভেজ বলেন, সাধারণত শিক্ষার্থীরা মজা করার জন্য এটা করে। তবে এটি নির্যাতনের পর্যায়ে যাওয়া ঠিক নয়। হলের নেতা-কর্মীদের এ ব্যাপারে সতর্ক করা হবে। নতুন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার নামে নির্যাতনের নিন্দা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক গালিব ইমতিয়াজ নাহিদ দাবি করেন, এ ধরনের নির্যাতনের সঙ্গে ছাত্রদলের কেউ জড়িত নয়। লব ইমতিয়াজ নাহিদ দাবি করেন, এ ধরনের নির্যাতনের সঙ্গে ছাত্রদলের কেউ জড়িত নয়।  

0 Response to "জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগিং -এর নামে নবীন ছাত্র -ছাত্রীদের উপর চলছে পাষবিক নির্যাতন"

Post a Comment